Photo by Sabbir Ahamed on Unsplash
সেই উনিশ শতকে ব্রিটিশরা যারা সাহেব বলে পরিচিত এই বাবু কথাটির আমদানি করেছিল। তাঁরা বাঙালি কর্মচারীদের বাবু বলে সম্বোধন করতো। ইংরেজ সাহেবদের কৃপায় এই বাবুদের প্রভাব বেড়ে গিয়েছিলো। এই বাবুরা উনিশ শতকের পুরোটা জুড়ে ছিলো। কলকাতার বাবু কালচারের কথা মূলত এই বাবুদের কার্যকলাপকে কেন্দ্র করেই মনোগ্রাহী হয়ে আছে আজও এই বিংশ শতকের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। এই বাবুদের বর্ণনা পাওয়া যায় টেকচাঁদ ঠাকুর, কালীপ্রসন্ন সিং হ যিনি হুতুম পেঁচা ছদ্মনামে বহুল পরিচিত ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচনায়।
একটু পিছিয়ে গেলে জানা যায় আট বাবু অর্থাৎ চোর বাগানের রামসুন্দর মিত্র, নীলমণি হালদার, ছাতু সিংহ, রাজকৃষ্ণ দেব, দর্পনারায়ণ ঠাকুর, রাজা সুখময় দত্ত, রাম রামতনু দত্ত, গোকুল চন্দ্র মিত্র দের হাত ধরে কলকাতার বাবু কালচার শুরু হয়েছিলো। তবে এই তালিকা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ আছে কারণ এদের কারো কার্যকলাপের সাথে কোন সামঞ্জস্য নেই। এরমধ্যে নীলমণি হালদার ছিলেন একজন জেলখাটা আসামী এবং প্রাণ কৃষ্ণ হালদারের টাকা তছরুপের সঙ্গী। আর যে প্রাণকৃষ্ণ হালদার গরিবদের চিকিৎসার জন্য খয়রাতির কথা সেকালের সংবাদপত্রে প্রকাশ পেয়েছিল তাঁর নাম এই আট বাবুর তালিকায় উল্লেখিত হয়নি। আবার ওয়ারেন হেস্টিংস এর মুন্সী রাজা নবকৃষ্ণ দেব যে প্রকৃত অর্থেই বাবু ছিলো তার নাম ওই আট বাবুর তালিকা পাওয়া যায় না। সেইকালে তিনি তার মায়ের পারলৌকিক ক্রিয়ার জন্য নয় লক্ষ টাকা খরচ করেছিলেন। আর তাঁরই পালিত পুত্র গোপীমোহন দেব তার স্ত্রীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে তিন লক্ষ টাকা ব্যায় করেছিলেন এবং সেই অনুষ্ঠানে প্রায় হাজার দশেক মানুষ নিমন্ত্রিত ছিলো। তবে আরবাবুর তালিকায় নাম উঠেছিল নবকৃষ্ণ দেবের বেশি বয়সের সন্তান রাজকৃষ্ণ দেবের। শোনা যায় পলাশীর যুদ্ধের সময় নবকৃষ্ণ দেবের মাস মাইনে ছিলো ষাট টাকা। কিন্তু যে চারজন নবাব সিরাজ দৌল্লার গুপ্ত কোষাগরের খোঁজ পেয়েছিলো তাদের মধ্যে নবকৃষ্ণ ছিলেন একজন এবং সেই বছরই উনি ধুম ধাম করে দুর্গাপুজো করেন যার জন ষাট টাকা মাস মাইনের কর্মচারী পক্ষে করা সত্যিই কল্পনার বাইরে ছিলো। আরেক বাবু রামতনু দত্ত যিনি তনুবাবু নামে পরিচিত ছিলেন তার বাবা তাকে ত্যাজ্যপুত্র করেছিলেন। কিন্তু দর্পনারায়ণ ঠাকুর যিনি ফরাসি চন্দননগরের দেওয়ান ছিলেন তিনি কিন্তু বাবু ছিলেন না তার আমলে। তার পুত্র গোপীমোহন ঠাকুর তার মায়ের সাথে তিন লক্ষ টাকা খরচ করেছিলেন। অথচ বাবুর তালিকায় দর্পনারায়ণ ঠাকুরের নাম উঠেছিলো।
আরেক বাবু ছাতু সিংহ যার আসল নাম ছিলো শান্তিরাম সিংহ। জোড়া সাকোর সিংহ পরিবারের জমিদারি যার হাত ধরে শুরু তিনি কিন্তু কখনোই বাবুয়ানিতে গা ভাসান নি।
সেই হিসেবে তার ছেলে, জয় কৃষ্ণ অনেকটাই এগিয়ে। তার নাতি কালীপ্রসন্ন সিংহ যদিও বাবুয়ানীতে পয়সাওড়াননি কিন্তু জনহিতে অকাতরে পয়সা খরচ করে গেছেন।
রামসুন্দর মিত্র মানে খ্যাদা মিত্তির বাবুর বাবু আনিছিল একটু অন্যরকম। নাম কিনেছিলেন চোর বাগানে প্রাসাদপোম এবং বাড়ি হাঁকানোর জন্য। কিন্তু গোকুর জন্য মিত্র ছিলেন সাত্ত্বিক মানুষ। তবুও কিভাবে তার নাম এই আট বাবুর নামের তালিকায় যোগ হয়েছিল এটা রহস্যই বৈকি। এসব বাবুদের বাবুয়ানি ছিল ঘুড়ি ওড়ানো,
বাজি পোড়ানো, পায়ড়া ওড়ানো এবং আরো কিছু অতি অদ্ভুত শখ মেটানোয়।
এদের এই শখের থেকেই সৃষ্টি হয়েছে” পায়রা ওড়াও বাজি পোড়াও“ কথাটিরএইসব বাবুয়ানীর অর্থ বোঝাতে।
আর এইসব শখ মিটানোর জন্যই হোতো মনোমালিন্য ঝগড়া বিবাদ মারামারি ও রক্তপাত। আরেক বাবু কানাই মল্লিক ঘুড়িতে পাঁচ টাকা আর দশ টাকা গেঁথে পুরাতন এবং একবার সেই বাবু সমস্তই খুইয়েছিলেন। আবার এর বিপরীত উদাহরণও আছে। যেমন শূন্য থেকে শুরু করে এক বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়েও রাম দুলাল দে (সরকার) এতটাই সাধারণ জীবন যাপন করতেন যে তার ছেলের বিয়েতে তারই নিয়োগ করা দারোয়ান তাকেই বাড়িতে ঢোকার সময় আটকে দেয়। রাম দুলালের ছেলে প্রমথনাথ আর আশুতোষ মানে যারা লাটু বাবু আর ছাতুবাবু নামেই পরিচিত তাদের কথা না বললে সেকালের কলকাতার বাবুদের শখ আহ্লাদ নিয়ে এই কাহিনী অসম্পূর্ণই থেকে যাবে। আর যেখানে মিনার্ভা থিয়েটার উনিশ শতকের শুরুতে সেখানে একটি মাঠ ছিল যে মাঠ পরিচিত ছিল ছাতুবাবুর মাঠ নামে। সেখানে বুলবুলি লড়াই লড়তেন বাবু। একবার তার বুলবুলিদের সঙ্গে হরনাথ মল্লিকের বুলবুলিদের লড়াইয়ের গল্প কলকাতার শহরের লোক গাঁথায় জায়গা করে নিয়েছে। একবার এই দুই ভাই রাজেন্দ্র নাথ মল্লিক ও হরনাথ মল্লিক স্নান করার সময় এক বিশাল ঝাল লন্ঠন ভেঙ্গে ফেলেছিলেন কারণ সেই ভেঙ্গে যাওয়ার আওয়াজ ওদের ভালো লাগছিল তাই।
একবার এক কাজের ব্যবসায়ী রাজেন্দ্রনাথ মল্লিককে না চিনতে পেরে কিছু কথা শুনে ছিলো। সেই কথায় তিনি অপমানিত বোধ করায় সেই ব্যাবসায়ী যে জাহাজ থেকে কাঁচ কিনতো সেই জাহাজের সমস্ত কাঁচ কিনে রাস্তায় ছড়িয়ে তার উপর দিয়ে রাজেন্দ্র মল্লিক ঘোড়ার গাড়ি করে বাবুঘাটে গঙ্গাস্নান করতে গিয়েছিলেন। আবার মল্লিক বাড়ির প্রদ্যুম্ন মল্লিক প্রতি শনিবার গাড়ি বিক্রি করে দিতেন আর ঠিক পরের শনিবার আবার দ্বিগুণ দাম দিয়ে সেই গাড়িই কিনতেন। আর অদ্ভুতভাবে তার চার চাকার ঘোড়ার গাড়ি ঘোড়ার বদলে জেব্রা টানতো। আর বাবু রাজচন্দ্র দাস যিনি সমাজ সংস্কারক নামেই বিখ্যাত ছিলেন। তিনি বাড়ির মহিলাদের গঙ্গাস্নান করার জন্য গঙ্গার ঘাট বাঁধিয়ে দ্যান। জাজও বাবুর ঘাট নামে বিখ্যাত হয়ে আছে। শোনা যায় তার জমিদারির মধ্যে আজকের ঈদের উদ্দানো ছিলো। সেই ঈদের উদ্যান তিনি বড়লাটের বোনকে জন্মদিনের উপহার দিয়েছিলেন। তবে বাবু রাজ চন্দ্র দাসের সমাজ সংস্কারক হিসাবে সুখ্যাতিও আছে। তিনি রাজা রামমোহন রায়কে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন সতীদাহ প্রথা বন্ধ করার আন্দোলনে।
এদের মধ্যে কেউ বেড়ালের বিয়ে দিত লাখ টাকা খরচ করে তো কেউ ব্যান্ডপার্টি বাজিয়ে গঙ্গাস্নানে যেতো। আবার কিছু বাবু, সব কাজেও খরচা করতেন। যেমন শ্যাম বাজারের দেওয়ান কৃষ্ণরাম বসু জাঁকজমক করে দুর্গাপুজো করতেন। আর বিসর্জনের সময় কেউ তাকে জলভরা কলসি দেখালে তাকে in এক টাকা দান করতেন। গঙ্গার ঘাট থেকে তার বাড়ি ছিল এক মাইল পথ সেখানে হাজার সাত এক লোক জলভরা কলসি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো এক টাকা পার্বণীর লাভের আশায়। আর ওইটুকু পথ আসতে কৃষ্ণ নাম হাজার সাতের টাকা খরচা করতেন সেই সময়।
আবার নিজের বাড়িতে সারা বছর শুয়ে থাকা বেশিরভাগ বাবুর কাছে ছিল পুরুষত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠার শামিল। তাই তাঁরা দিনে থাকতেন নিজের বাড়িতে আর রাতে থাকতেন রক্ষিতার বাড়িতে। অনেক বাবুর আবার একাধিক রক্ষিতা থাকতো। যতোই পুজো পাঠ করুন তাঁরা সনাতন ধর্মের যত বড়ই ধ্বজাধারী হয়ে থাকুন রক্ষিত আর বাইজীর বিষয়ে তারা ছিলেন সম্পূর্ণ সেকুলার। তাই বাবুদের মুসলমান উপপত্নি থাকলেও কোন অসুবিধা ছিলোনা। নিজের বাড়িতে স্ত্রীকে পাশে নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে দুর্গাপূজো করে তারপর মুসলমানের সাথে বাজি পোড়ালে তাদের ধর্মের সুতোয় টান পড়তো না। শোনা যায় কালী প্রসাদের উপপত্নী আনার বিবি ছিলেন পরমা সুন্দরী মুসলমান আর তাকে কালীপ্রসাদ সর্বদা আগলে রাখতেন।। অনেক বাবুর তার দিকে নজর থাকলেও চূড়ামণির প্রতাপের ভয়ে কেউ সাহস করতেন না আনার বিবির কাছে পৌঁছতে।
আর এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে সুন্দরী উপবতী নিয়ে হিংসে আর সারিসির কাছে ঘুড়ি ওড়ানো আর বাজি পোড়ানো ছিলো নিতান্তই পানসে। এই বিষয়ে কোন পর্যায়ে নোংরামি হোতো চূড়ামণি দত্তের পুত্র কালীপ্রসন্ন দপ্তর সাথে হয়ে যাওয়া ঘটনা প্রমাণ বিবরণ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়। নবকৃষ্ণ দেব জমিদার হয়ে শহরের সাহেবদের নিজের পক্ষে আনলেও প্রতিবেশী জমিদার চূড়ামণি দত্তের কাছে বিশেষ পাত্তা পেতেন না তিনি।
নবকৃষ্ণ বিষয়ী আর চূড়ামণি ছিলেন প্রকৃত অর্থেই দানী। তাঁর কাছে কোনো দুঃস্থ মানুষ সাহায্য চাইলে চাহিদার অতিরিক্ত দিয়ে তিনি তাকে তবেই ফেরাতেন। বলে দিই বড়লোক চূড়ামণি সুযোগ পেলেই হঠাৎ বড়লোক হওয়া নবকৃষ্ণকে টিটকিরি দিতেন। আর নবকৃষ্ণের যেসব সহ্য করা ছাড়া কোনো উপায়ও ছিল না। চূড়ামণি তার শেষ দিন পর্যন্ত নবকৃষ্ণকে উত্তাক্ত করেছেন।একশো ঢাকি নিয়ে গঙ্গা যাত্রার রাস্তায় তার মোসাহেবেরা” দুনিয়া জিনিয়ে চূড়ো যম জিনতে যায়“বোলে নবকৃষ্ণের বাড়ির সামনে নাচ গান করেছিলেন। চুড়ামণির মৃত্যুর পর বাবু সম্প্রদায় তুলেছিল যেহেতু কালীপ্রসাদ মুসলমান রক্ষিতার সাথে জীবনযাপন করেন তাই তাঁর জাত গ্যাছে এবং সনাতন হিন্দু মতে তিনি পিতৃশ্রাদ্ধ করার অধিকার হারিয়েছেন। আর সেই কারণে কোনো পুরোহিত শ্রাদ্ধবাসরে থাকবে না।
তবে শেষ পর্যন্ত বরিশাষার জমিদার সন্তোষ রায় তাঁর জমিদারির পুরোহিতকে সঙ্গে এনে কালীপ্রসাদকে পিতৃদায় থেকে উদ্ধার করেন। আর মজার ব্যাপার যারা এই জাত বেজাতের জিগিরের নেতৃত্ব দিয়েছিলো সেই নবকৃষ্ণ দেবের ছেলে রাজকৃষ্ণ দেবেরও মুসলমান রক্ষিকা ছিলো আর তার পালিত পুত্র গোপীমোহন সুদূর বর্মা থেকে কিছু সুন্দরী নর্তকী বানিয়েছিলেন মনোরঞ্জনের জন্যে। তবুও ধর্ম -অধর্মর বিচার রাজাদের ক্ষেত্রে বিচার্য নয়। সেই কারণে রাজা নবকৃষ্ণের পরিবার আর তাঁদের পার্ষদরা এই দোষে দুষ্ট নয়।
ঠাকুরবাড়িতেও এই বাবুয়ানির ছোঁয়া লেগেছিলো। যেমন গোপাল লাল ঠাকুরের ভাই কানাইলাল ঠাকুর পোশাক পরা মাছ খেতে পছন্দ করতেন তাই তাঁকে বড় লাল কোর্তা পরা মাছ পরিবেশন করতে হোতো। কারণ তিনি মাছের নগ্নরূপ সহ্য করতে পারতেন না। আবার দিনরাত ঠাকুর নৌকোয় বসে ঝড় উঠলে পাল তুলে দিতেন। মাঝিরা যখন দামাল ঝড়ে ভয়ে কাঁপত তিনি তখন অট্টহাসিতে ফেটে পড়তেন আর মাঝিদের আদেশ দিতেন প্রকৃতির সাথে এগিয়ে যেতে। আর দাদা দেবেন্দ্রনাথ গামছার জন্য গামছা ব্যবহার করতেন না। তার জন্য মসলিনের কাপড়ের টুকরো রাখা থাকতো। কারন তিনি ভয় পেতেন যদি তাঁর নরম চামড়া গামছার দক্ষতায় রক্তপাত ঘটায় সেই কারণে।
এবার আসি যার বাবুয়ানির অনেক গল্প শোনা যায় সেই দারোগাড়ার ঠাকুরের জীবনযাত্রার ধরন থেকে বোঝা যায় সেই গল্পগুলোর কোন সারবত্তানেই। দ্বারকানাথ ঠাকুর যিনি প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর নামেই বেশি খ্যাত ছিলেন তার উপপত্নীর কথা কোথাও জানা যায় না। জানা যায় তিনি গোটা পঞ্চাশেক গলিকালয়ের মালিক ছিলেন। এখন গণিকালয়ের মালিক হওয়া উচিত কাজ সেই যুক্তি তর্কে না গিয়ে বরং এটা মেনে নেওয়া যেতেই পারে সেই সময়ের নৈতিকতার ধ্বজাদারি বেশিরভাগ বঙ্গপুঙ্গবগণিকালয়েযেতেন তাই ব্যবসায়ী হিসেবে সেখানে লগ্নি করেন নি তিনি। তাঁর আমলের বেশিরভাগ বাবু যখন নেশায় ডুবে থাকতেন দ্বারকানাথ শুধু তখন দিনে এক গ্লাস শেরি পান করতেন। বেলগাছি আর বাগানবাড়িতে যে নাচগান আর খানাপিনা হোতো সেখানে আসতেন কলকাতার গণ্যমান্য সাহেবরা আর শহরের দিশি কর্তাব্যক্তিরা। এটাকে একরকম বিজনেস মিটও বলা যেতে পারে। পুত্র দেবেন্দ্রনাথ তার পিতার উশৃংখল জীবন যাপন আর ব্যবসায় হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য ”কার এন্ড
ট্যাগোর“কোম্পানীর দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার কথা বলে তাঁকেই দায়ী করেছেন। দেবেন্দ্রনাথ বলেছেন ”কার এন্ড টেগোর“কোম্পানির দিনার পরিমাণ সে সময় ছিল প্রায় ত্রিশ লক্ষ টাকা। দ্বারকানাথের অভিজ্ঞ বিজনেস পার্টনার গর্ডন ও ইয়ং বুঝে গিয়েছিলেন দ্বারকানাথের তৈরি কার এন্ড টেগোর কোম্পানির হাল তার অবর্তমানে তাঁর ছেলেদের রক্ষা করার ক্ষমতা নেই। তাই তারা ঠাকুর পরিবারের সংসদ থেকে বেরিয়ে গর্ডন ষ্টুয়ার্ট নামে কোম্পানি চালান১৮৬৭ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত।
প্যারীচাঁদের”আলালের ঘরের দুলাল“, কালীপ্রসন্নের “হূতোম প্যাঁচার নকশা“তেও বাবুদের পরিচয় পাওয়া যায়। তবে বাবুদের শুরু আরও আগে যেখানে ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
“সেকালের কথা”তে ১৮২১খৃষ্টাব্দে ”বাবুর উপখ্যান“ নামে দুটি রচনা প্রকাশ করেছেন। বাংলায় বাবু সেই প্রথম। সেই সূত্রে বাংলা সাহিত্যে প্রথম বাবু রাজ চক্রবর্তী।
এসব নিয়েই সেকালের বাবুয়ানির সাতকাহন যার একটা চালচিত্র আমি ফুঁটিয়ে তোলার চেষ্টা করলাম এই সীমিত কলমে।