আমার জন্ম স্বাধীনোত্তোর ভারতবর্ষে পঞ্চাশের দশকে এই পশ্চিমবঙ্গে । তবুও আমার বাবা-দাদাদের মুখে পূর্ব বাংলা অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশের অনেক কথা সেই শৈশব থেকে শুনে আমার বেড়ে ওঠা। আমাদের বেশিরভাগ প্রতিবেশী এবং আত্মীয়-স্বজন ছিলেন সেদিনের পূর্ব বাংলা থেকে বিতাড়িত সনাতনী হিন্দু। সেই সময় অর্থাৎ স্বাধীনতার পর এবং সত্তরের দশক পর্যন্ত আমরা কলকাতা শহরতলীর যে সমস্ত এলাকায় বেড়ে উঠেছি সেই এলাকাগুলোকে তখন কলোনি বলা হোতো। আজও যে আমরা আমাদের স্বাতন্ত্র বজায় রেখে মাথা উঁচু করে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে পেরেছি সেটা সম্ভব হয়েছে যেদিন ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে ২০ শে জুন, ১৯৪৭সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইন সভায় ভোটাভুটির মাধ্যমে অবিভক্ত বাংলা প্রদেশকে ভাগ করার সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ার কারণে।
আসলে এই পশ্চিমবঙ্গের রূপকার ছিলেন ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। এবং এর পেছনের কারণ ছিলো ১৯৪৬ সালে কলকাতার ” গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস“এবং নোয়াখালীর দাঙ্গা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একমাত্র উপায়। সেই কারণেই তিনি ও সেদিনের বরিষ্ঠ রাজনীতিবিদরা পশ্চিমবঙ্গ সৃষ্টি ও পশ্চিমবঙ্গের ভারত ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাই বর্তমানের কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশ দিয়েছে এই পশ্চিমবঙ্গ দিবস উদযাপনের ছবিসহ রাষ্ট্রপতির কাছে বিস্তারিত জানাতে। ১৯৪৭ সালের ২০ শে জুন তৎকালীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভায়(যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাবর্দী) বাংলা ভাগ হবে কিনা সেই সিদ্ধান্তের উপর ভোটাভুটি হয়। কিন্তু মুসলমান সংখ্যাগুরু পূর্ববঙ্গের জনপ্রতিনিধিদের বাংলা ভাগ করার বিপক্ষে ভোট পড়ে ১০৬ টি এবং বাংলা ভাগের পক্ষে ভোট পড়ে মাত্র ৩৫টি। অপরদিকে হিন্দু সংখ্যাগুরু পশ্চিমবঙ্গ অংশের জন প্রতিনিধিরা ৫৮-২১ ভোটে বাংলা ভাগ করার পক্ষে মত দেন।
অধ্যাপক রবিরন্জন সেন যিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের পশ্চিমবঙ্গ শাখার এক সময়ের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তার মত অনুযায়ী এই সিদ্ধান্তকে আমরা বাংলা ভাগের সিদ্ধান্ত হওয়ার দিন হিসেবে না দেখে যেন বিপরীতভাবে এই দিনে পশ্চিমবঙ্গ সৃষ্টির এবং পশ্চিমবঙ্গের ভারত ভুক্তির সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখি। সেদিন যদি দেশভাগের সিদ্ধান্ত না নেওয়া হতো তাহলে পুরো বাংলাই ভারত থেকে বেরিয়ে যেত।
আর যারা ২০ শে জুন বা দেশ ভাগকে অন্ধকার সময় বলে অভিহিত করেন আসলে সেই অন্ধকার সময়ের সূচনা হয়েছিল আরো অনেক আগে। ১৯৪০ এর প্রথম থেকে যে দাঙ্গা পরিস্থিতি এবং বর্ণ হিন্দুদের উপর পাশবিক অত্যাচার চলেছিল ১৬ ই আগস্ট ১৯৪৬ সালে যে ডিরেক্ট আ্যকশন ডের পথে দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস চলেছিল এবং নোয়াখালী দাঙ্গায় তার চূড়ান্ত রূপায়ণ হয়েছিল সেই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতেই মানুষ বাংলা ভাগ মেনে নেয় এবং পশ্চিমবঙ্গের সৃষ্টি হয়। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ হিন্দু মহাসভার নেতা ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে তাই পশ্চিমবঙ্গের জনক হিসেবে সম্মান করে থাকেন। যদিও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সেই সময় প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন সে কথা ঠিক তবুও তিনি একা ছিলেন না দলমত নির্বিশেষে পশ্চিমবাংলার বুদ্ধিজীবীরা সবাই বাংলা ভাগের সমর্থন করেছিলেন সেদিন। এমনকি তৎকালীন কংগ্রেস ও এই বাংলা ভাগে সমর্থন করেছিল। শুধু শরৎচন্দ্র বসু ও কিরণশঙ্কর রায় সোহরাবর্দীর অবিভক্ত বাংলার পরিকল্পনার ফাঁদে পা গলিয়েছিলেন।
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা দিবসের কয়েক মাস আগে অবিভক্ত বাংলার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাবর্দী এবং বাবুল কাশিমদের মতন বেশ ক’জন মুসলিম লীগ নেতা আর কংগ্রেস নেতা শরৎচন্দ্র বসু ও কিরণ শঙ্কর রায়েরা বাংলাকে ভাগ না করে যুক্তবঙ্গ প্রদেশের পরিকল্পনা করেছিলেন। যে পরিকল্পনার গাল ভরা নাম ছিল ইউনাইটেড বেঙ্গল প্ল্যান। এই পরিকল্পনাকে একটা সময়ে গান্ধীজী এবং পাকিস্তানের জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাও সমর্থন করেছিলেন। কারণ বেশ কয়েকবার কলকাতার লাগোয়া সোদপুরের খাদি আশ্রমে গান্ধীজী এসে যুক্তবঙ্গ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করে গেছেন।
কিন্তু এই পরিকল্পনাটির প্রচন্ড বিরোধিতা করেছিলেন তৎকালীন হিন্দু মহাসভার নেতা ও আইনসভার সদস্য ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং কংগ্রেস হাই কমান্ডের পন্ডিত জহরলাল নেহেরু ও সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল।
পশ্চিমবঙ্গের সৃষ্টিকর্তা বলে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জিকে সম্মান করে থাকে। কারণ বাংলা ভাগ নিয়ে তাঁর যুক্তি ছিল যদি বাংলাকে ভাগ করা না হয় এবং যদি “যুক্তবঙ্গ”নামেই একটি তৃতীয় সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন হয় তাহলে সেই “যুক্তবঙ্গ” একসময় পাকিস্তানে চলে যাবে।
এমনকি লর্ড মাউন্টব্যাটেনও তিনটি সার্বভৌম রাষ্ট্র অর্থাৎ ভারত,পাকিস্তান এবং যুক্তবঙ্গ গড়ার ঘোষণা করেছিলেন লন্ডনে তার দুটো ভাষণে। কিন্তু এই পরিকল্পনাকে লন্ডন থেকে ফিরে আসার পর কংগ্রেস হাই কমান্ড জহরলাল নেহেরু ও সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল সেই যুক্তবঙ্গের প্রাথমিক পরিকল্পনাকে নস্যাৎ করে দেন আর সেখানেই অংকুরে বিনষ্ট হয় ওই পরিকল্পনা। একটু ফিরে দেখলে সহজেই বোঝা যায় এই ২০ শে জুন মানে পশ্চিমবঙ্গ দিবস ছিল বর্ণ হিন্দুদের নিজেদের অধিকারের দাবিতে এক স্বদেশ প্রতিষ্ঠার সিলমোহর। যে অধিকার ছিল ভারত রাষ্ট্রের সাথে সংযুক্তিকরণ। যে লড়াইয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির প্রবল প্রতিপক্ষ ছিল কুচক্রী এবং পাকিস্তানের রূপকার মোহাম্মদ আলী জিন্না। যে জিন্না ছিল পুরোপুরি সাম্প্রদায়িক পক্ষপাতদুষ্ট।
পশ্চিমবঙ্গ শুধুই একটি রাজ্য নয় এটি ছিল তৎকালীন বাংলার একটি অভিন্ন অঙ্গ। আজ পশ্চিমবঙ্গ বাঙালি অস্মিতারই আরও এক পরিচয় যা বাঙালির অস্তিত্বকে সগর্বে ধারণ করে আছে। পশ্চিমবঙ্গ দিবসের এবং পশ্চিমবঙ্গ গঠনের প্রস্তাব এক অবর্ণনীয় ইতিহাস। বহু ত্যাগ এবং রক্তঝরা সংগ্রামের সার্থক রূপ আজকের এই পশ্চিমবঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গ হোলো এই উত্তরাধিকার যা আজও স্বাধীনতা সংগ্রামের ত্যাগ এবং তিতীক্ষাকে গর্বের সাথে স্মরণ করায়। এই সংগ্রামে আরো এক বাঙালির যথেষ্ট অবদান ছিল তাঁর নাম ছিল গোপাল মুখোপাধ্যায়। তিনি গোপাল পাঠা নামেই বহুল প্রচলিত ছিলেন। যার একার উদ্যোগে দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস নামে হিন্দু নিধন যজ্ঞ প্রতিহত হয়েছিলো সেদিন।
এই পশ্চিমবঙ্গই ভারতের নবজাগরণের বার্তা বাহক। এই পশ্চিমবঙ্গেই রাজা রামমোহন রায়, স্বামী বিবেকানন্দ, পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাদের অবিস্মরণীয় কীর্তি গাঁথায় বিভিন্ন আঙ্গিকে সমৃদ্ধ করে গেছেন।
স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের সুপুত্র ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ছিলেন একজন আদ্যন্ত শিক্ষাবিদ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানীয় উপাচার্য। তিনি ছিলেন যথার্থই নিঃস্বার্থ এক মানুষ। যাকে কংগ্রেস পরে রাজনীতির রঙে কলুষিত করতে পেছপা হয়নি এবং আজও সেই প্রচেষ্টা তারা করে চলেছে। কিন্তু সত্য সূর্যের মত ভাস্বর। সত্যের প্রকাশকে কখনো দমিয়ে রাখা যায় না। এই পশ্চিমবঙ্গ দিবসের মাহাত্ম্য হোলো অত্যাচারিত নিপীড়িত বাঙালি হিন্দুদের স্বভূমির স্বপক্ষে এক রক্তঝরানো সংগ্রাম। যখন ব দেশ ভাগ হয়ে উঠেছিলো অবশ্যম্ভাবী কারণ মুসলিম মৌলবাদীরা হিংসার আশ্রয় নিয়ে দাবি তুলেছিল তাদের স্বপক্ষে, ঠিক সেই সময় পশ্চিমবঙ্গকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কুচক্রী জিন্নার প্রস্তাবিত পাকিস্তানের অঙ্গরাজ্য করার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে। তবে এটাই আক্ষেপের বিষয় যে বর্তমান প্রজন্মের বহু বাঙালির কাছেই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের এই সংগ্রামের কাহিনী অজানার অন্ধকারে হারিয়ে গেছে কিছু স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক নেতার ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে।
সেটা ছিল ১৯৪৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস যখন লর্ড পেথিক লরেন্সের নেতৃত্বাধীন ক্যাবিনেট মিশন (ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাটলি প্রেরিত) ভারতে এসেছিলো এবং যে দলে পেথিক লরেন্স তারাও ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার আরো দু’জন সদস্য স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস ও এ ভি আলেকজান্ডার ও ছিলেন। এই ক্যাবিনেট মিশনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশদের হাত থেকে ভারতীয় নেতৃত্বের হাতে ক্ষমতার হস্তান্তর নিয়ে আলোচনা করা এবং সেই আলোচনায় মুসলিম লীগের পাকিস্তান গঠনের দাবি মান্যতা পায়। ওই ক্যাবিনেট মিশন প্রস্তাব করে অনতিবিলম্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে সংবিধান রচনা করার। যখন কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগের মধ্যে মতানৈক্যের সৃষ্টি হয় তখন মুসলিম লীগ নিজেদের সমর্থন প্রত্যাহার করে। এই মুসলিম লীগ তখন ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান কোরে ” ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে “নামে খোলাখুলি মৌলবাদী হিংসার পথে পা বাড়ায়।
সেই হিংসার বলি হয়েছিলেন অন্তত দশ হাজার হিন্দু বাঙালি এবং অগণিত হিন্দু মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল সেই” ডাইরেক্ট আ্যকসন ডে “-র নাম করে। আরি “ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে” -র মূল চক্রী ছিল সেদিনের অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাবর্দী। সেই কারণেই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের অঙ্গরাজ্য করা স্বপক্ষে এক অসম সংগ্রাম করেন এবং হিন্দুত্বকে রক্ষায় সদর্থক ভূমিকা পালন করেন। আর সেই যুগ সন্ধিক্ষণে বাংলার বুদ্ধিজীবী সমাজ ভাষাবিদ সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়, ইতিহাসবিদ রমেশচন্দ্র মজুমদার, বিজ্ঞানী ডঃ মেঘনাদ সাহা, ডক্টর যদুনাথ সরকার, ডক্টর মাকর লাল চৌধুরী প্রমুখ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের এই প্রস্তাবের সমর্থন করে এগিয়ে আসেন। তাঁরা বাংলা ভাগের ও পশ্চিমবঙ্গকে ভারতে অন্তর্ভুক্তি করনে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন। তারই ফলস্বরূপ পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অঙ্গরাজ্য রূপে আত্মপ্রকাশ করে এবং পূর্ববঙ্গ হয়ে যায় পাকিস্তানের একটি প্রদেশ।
যা পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত হয় এবং আজ নতুন দেশ ”গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ“ জন্ম নেয়। এই সব ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ২০ শে জুন ১৯৪৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ দিবসের মাহাত্ম্য এক কথায় অনস্বীকার্য। ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সেই অসম সংগ্রামে সগর্বে জয়ী হওয়ার পর জহরলাল নেহেরুকে বলেছিলেন” তোমরা ভারত ভাগ করেছ আর আমি ভাগ করেছি পাকিস্তানকে।“
যদি সেদিন ভারত মায়ের মহান সন্তান শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী রুখে না দাঁড়াতেন আজ বাঙালি হিন্দুরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতো। তিনি খাদের কিনারা থেকে সনাতনী বাঙালি হিন্দুকে রক্ষা করেছিলেন। সোহরাবর্দীর “ডাইরেক্ট আ্যকশন ডে”-র স্মৃতি আর সেই মারনযজ্ঞ আজও বাঙ্গালী হিন্দুদের মনে শিহরণ জাগায়।
পরিশেষে বলা যায় ২০ শে জুন ”পশ্চিমবঙ্গ দিবস” হিন্দু বাঙালির অস্মিতার এক সদর্প ঘোষণার দিন। যা অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মর্মস্পর্শী কাহিনী হিসেবে।