Image by Jignesh Solanki from Pixabay 

একশো তেত্রিশ কোটিরও বেশি মানুষের দেশ আমাদের স্বদেশ, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশের

গর্বের কাঙ্খিত স্বাধীনতা দিবস|

বহু মৃত্যুঞ্জয়ীদের তাজা তাজা প্রাণের নির্ভিক আত্মবলিদান , ফাঁসির মঞ্চে উদাত্ত নির্ভিক গলায় গেয়ে গেছেন ওঁরা জীবনের জয়গান , ভারত মায়ের জয়গান| কাঁপিয়ে দিয়ে গেছেন অত্যাচারী ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রাজসিংহাসন, অশনি সংকেতের পূর্বাভাষে ভয়ে কেঁপে পালিয়েছে শয়তান , করে দিয়ে গেছে টুকরো টুকরো ভারতমাতার ভূমি|

অনেক অনেক যন্ত্রণা বুকে নিয়েও ভারতমাতা আজ স্বাধীন| কিন্তু এ কোন স্বাধীনতা আজ ও চাষী ভাইদের স্বাধিকারের সন্মান রক্ষার্থে দিল্লির রাজপথে তীব্র শীতল রাতে দিতে হয় কেন প্রাণ, কেন আজ ও শ্রমিক ভাইদের ক্লান্ত শ্রান্ত শরীর ঘুমিয়ে পড়ে রেল লাইনের উপর, উন্মাদের মতোন ওঁনাদের ঘুমন্ত শরীরের উপর

দিয়ে ছুটে যায় রেলগাড়ী, এ কোন স্বাধীনতা সামান্য স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্যে মুমূর্ষু মানুষের জন্যে জোটে না অক্সিজেন, জোটে না টিকা সংক্রমণ প্রতিরোধে, এ কেমন স্বাধীনতা বলতেই হবে জয় শ্রী রাম , নইলে۔۔ গনপিটুনিতে দিতে হবে প্রাণ, এ কেমন স্বাধীনতা মুখে ভারত মাতা কি জয় ۔۔۔۔গঙ্গা মাইয়া কি জয় ۔۔۔۔۔আর সেই গঙ্গা মাইয়ার বুকেই রাতের অন্ধকারে ভাসিয়ে দেওয়া হবে সংক্রমণে মারা যাওয়া হাজার হাজার মানুষের শবদেহ , এ কেমন স্বাধীনতা যেখানে নারীজাতির সন্মান বারংবার হয় ভুলুন্ঠিত ধর্ষিত?

এ কেমন স্বাধীনতা যেখানে অন্নদাতা চাষীভাইদের ই পেটে জোটে না ভাত? এ কেমন স্বাধীনতা যাঁরা গড়ে দেন তোমাদের বিলাসবহুল অট্টালিকা রাজপথ তাঁদের ই পেটে জোটে না ভাত , জোটে না নূন্যতম সন্মান , ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে কেন গরীবমানুষগুলোকে খেতে হয় কেন্দ্রীয়বাহিনীর চালানো নির্বিচারে চালানো গুলি ? কেন তার পরেই আগ্রাসী উন্মাদগুলো হুঙ্কার ছাড়ে ভারত মাতা কি জয় ? কেন হুঙ্কার শুনি উন্মাদগুলোর এমন ই দিকে দিকে চালানো হবে গুলির ফুলঝুরি ? দিকে দিকে ঘটবে শীতলকুচির মতোন নারকীয় অত্যাচারী শাসকের হুঙ্কার ? কি অপরাধ ۔۔۔۔নিরপরাধ আমজনতার?

স্বাধীনতা খালি তোমাদের ই জন্যে মলে মলে আজাদী খরিদনেকির বড়লোকি উল্লাস ? স্বাধীনতা কি শুধুই মাৰ্কেটিং বিশাল বিশাল মাল্টিন্যাশনাল কর্পোরেটস বিজ্ঞাপনের , বিশাল বিশাল উচ্চবিত্তের জন্যে ডিসকাউন্টের উৎসব?

অনেক অনেক অনেক প্রশ্ন ভীড় করে আসে অভুক্ত আধপেটা ক্ষুধার্তদের চোখে , মনে আজ|

কে দেবে জবাব? কে দেবে কাজ এই লকড ডাউনের যুগে? কে জোটাবে ভাত ক্ষুধার্ত ওই আধপেটাদের মুখে ? কবে পাবেন ওনারা সত্যিকারের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ۔۔۔۔۔۔কবে মনে প্রাণে ওনারা আবার মেতে উঠবেন স্বাধীনতার উৎসবে?

জাতীয় পতাকা আছে আমাদের ঘরে

আছে প্রতিটা ভারতবাসীর অন্তরে অন্তরে,

তিরঙ্গাকে মোরা ভুলি কেমন করে

স্বাধীনতার রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ভুলি কেমন করে?

কি দিয়ে বোঝাই ওই চূড়ান্ত মূর্খদের দলটারে

ওরে তোরা তিরঙ্গা নিয়ে লোকদেখানো রাজনীতি

আর করিস না রে,

মানুষ তোদের ফাঁকিবাজীটা সহজেই ধরতে পারে|

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিক আমরা,

জাতীয় পতাকার সন্মানরক্ষা করতে জানি আমরা,

লকড ডাউনের চূড়ান্ত খারাপ সময়ে অসহায় দুঃস্থ মানুষদের সাহায্যার্থে নিজেদের সাধ্য মতো এগিয়ে এসেছিলাম আমরা|

মানবতার স্বার্থে ওঁনাদের ভালো রাখতে হাতে হাত

রেখে আবারো পাশে থাকবো আমরা,

পঁচাত্তরতম স্বাধীনতা দিবসের উদযাপনে অন্তরে অন্তরে এই মন্ত্র ই নেবো আমরা|

.    .    .

Discus