সিমোনেত্তা ভেসপুচ্চি যার ডাকনাম লা বেলা সিমোনেটা, তিনি ছিলেন জেনোয়া থেকে একজন ইতালীয় সম্ভ্রান্ত মহিলা, যিনি ফ্লোরেন্সের মার্কো ভেসপুচির মাসতুতো বোন। তিনি ইতালিতে তার বয়সের সর্বশ্রেষ্ঠ সুন্দরী হিসাবে পরিচিত ছিলেন, এবং সান্দ্রো বোটিসেলি, পিয়েরো ডি কোসিমো এবং অন্যান্য ফ্লোরেন্টাইন চিত্রশিল্পীদের অনেক চিত্রকর্মের মডেল ছিলেন।

 মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল বাইশ। ঐতিহ্যগতভাবে, মনে করা হত যক্ষ্মার কারণে মৃত্যু হয়েছিল; যাইহোক, নতুন প্রমাণ দেখায় যে সিমোনেটা একটি পিটুইটারি অ্যাডেনোমায় ভুগছিলেন যা প্রোল্যাক্টিন এবং গ্রোথ হরমোন নিঃসরণ করে। টিউমারের পরিমাণ বৃদ্ধি তাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। সকলের প্রশংসা করার জন্য তাকে একটি খোলা কফিনে শহরের মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

এনাকে আগে উত্তর ইতালীর সেরা সুন্দরী বলে মনে করা হতো ভেসপুচ্চিকেই। এই সৌন্দর্যের কারণেই বত্তিচেল্লি সহ ফ্লোরেন্সের অনেক চিত্রশিল্পীরই চিত্রের মডেল হয়েছিলেন এ তরুণী। যেমন- বত্তিচেল্লির ১৪৮০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে অঙ্কিত ‘দ্য বার্থ অফ ভেনাস’ চিত্রকর্মে মাঝখানে ভেনাসরুপে দাঁড়ানো নারী আর কেউ নন, স্বয়ং ভেসপুচ্চিই, যিনি সেখানে ভেনাসের মডেল হিসেবে ছিলেন।

আজকের দিনে কোনো জনপ্রিয় মডেলের দেখা পেলে সমলিঙ্গের সবাই যেমন তার মতো হতে চায়, ভেসপুচ্চির বেলাতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তৎকালীন ইতালীয় নারীরা ফ্যাশনের জন্য তার অন্ধ অনুকরণেই অভ্যস্ত ছিলেন।

চেহারাকে ধূসর, সাদা ও আরো সৌন্দর্যময় করে তোলার জন্য ভেসপুচ্চির সময়ের নারীরা মুখে জোঁক লাগিয়ে রাখতেন। জোঁকেরা তাদের মুখ থেকে রক্ত চুষে নিতো। ফলে রক্তহীনতায় মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যেত, আর এটাই তারা চাইতেন! যারা জোঁক ব্যবহারে আগ্রহী ছিলেন না, তারা পাউরুটির টুকরো, ডিমের সাদা অংশ ও ভিনেগার একত্রে মিশিয়ে ফেস মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করতেন।

জন্মগতভাবেই ভেসপুচ্চি ছিলেন স্বর্ণকেশী। তার দেখাদেখি অন্য অনেকেও নিজেদের চুলকে সোনালী রঙের বানাতে চাইতেন। তবে নিজেদের চুলকে সেভাবে সজ্জিত করার মতো অর্থ যেসব দরিদ্র নারীর থাকতো না, তারাও সাধ মেটাতে নিজেদের চুলের রঙ হালকা করার উদ্দেশ্যে সেখানে নিজেদের মূত্রই ব্যবহার করতেন।

.    .    .

Discus