খ্রিস্টান ধর্ম মূলত ইসা (আঃ) থেকে প্রচারিত হয়ে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে গেছে প্রথমে এর মূল ছিল আল্লহর ইবাদাত কিন্তু পরে হাওয়ারিয়্যুন এটা পালটাতে পালটাতে অন্য একটি ধর্মে পরিণত করে দিয়েছে এই ধর্মে ইসা (আঃ)-কে তারা ভগবানের বা রবের পুত্র বানিয়ে দিয়েছেন তিনার মা মানে মরিয়াম (আঃ) কে তারা ভগবানের বা রবের স্ত্রি বানিয়ে দিয়েছে। আসলে তারা গ্রীকদের সাথে থাকতে থাকতে তাদের চিন্তা ভাবনাও গ্রিকদের মতো হয়ে গেছিলো। ফলে যখন বাবলনিয়া সাম্রাজ্যের সম্রাট তাদের উপর হামলা করেছিলো। তখন তাদের পুর বাইবেল ধ্বংস হয়ে গেছিল এবং বনী ইস্রাইলের প্রধান যায়গা হায়কালে সুলাইয়মানি -কে ধ্বংস করে রেখে দেয়।
এবং তখন থেকে একবার আবারও খ্রিস্টানের উপর অত্যাচার শুরু হয়ে যায় যেমন বনী ইস্রাইলের উপর মিশরের রাজা ফেরাউন মানে দ্বিতীয় রামসেস করতো। প্রায় অনেক বছর পর একজন ভালো রাজা সাইরাস দ্য গ্রেট ( যাকে আজকের যামানায় কিছু ইসলামিক আলিমগণ যুল কারনাইন ও বলে থাকে ) এসে তখন বাবলনিয়া সাম্রাজ্যকে ধ্বংস করে রেখে দেয়। এবং আবারও বনী ইস্রাইলদের এবং খ্রিস্টানেরকে সুন্দর সুখময় জীবন দান করে আর তার সাথে হায়কালে সুলাইয়মানি কে আবারও ভাল করে তৈরি করে দেয়। আর এই সময় খ্রিস্টানরা আবারও বাইবেলকে লেখা শুরু করে কিন্তু এই সময় অনেক ভুল ও বিভ্রান্তি লক্ষ করা যায়। সেইজন্যে সেই সময়কার চার্চ একটি বাইবেলকে বেছে নেই এবং বাকি সমস্ত বাইবেল গুলিকে ভুল ও বিভ্রান্তি বলে ঘোষণা করে দেয় ফলে আজও এর মধ্যে ত্রুটি থেকে গেছে। কিন্তু এই ত্রুটি থাকার অন্য একটি কারণ নাইসিয়ার সন্ধি।
খ্রিস্টানের মতে যদি দেখা যায় তাহলে দুই রকমের বিভাগে বিভক্ত হয়ে পাব প্রথমটি হল যেটি পরিবর্তন করা হয়নি মানে যেটি আসলেই নবীদের কাছে এসছিল আর দ্বিতীয়টি হল যেটি নবীদের পরে তাদের বংশের,গোত্রের ও তার উম্মতরা পরিবর্তিত করে ছিলো।
প্রথমটি : যেটি পরিবর্তন করা হয়নি মানে যেটি আসলেই নবীদের কাছে এসছিল এ রকম অনেক নবীদের কাছে ইলহাম বা আল্লাহ দ্বারা পাঠানো জ্ঞান অনেকেরই কাছে এসছিল এবং নবীরা তার গোত্রের বাসিন্দাদের মধ্যেও এই কথা টিকে ছরিয়ে দিতেন যে যখন তোমাদের কাছে শেষ নবী এলে তোমরা তাকে অস্বীকার করোনা যেমনটা তোমরা আমার রবের ধর্ম প্রচারের সময় কষ্ট দিয়ে ছিলে তোমরা তাকে অনুসরণ করো। তাদের নাম যদি সাজানো হয় তাহলে কিছুটা এ রকম হবে :
নাইসিয়ার সন্ধি যা খ্রিস্টানরা রোমান সাম্রাজ্যের সাথে করেছিল। এই চুক্তি বা সন্ধি অনুযায়ী খ্রিস্টানরা নিজেদের ধর্মে এবং বাইবেলের মধ্যে যদি কিছু পরিবর্তন করে এবং রোমানদের ধর্মের সমস্ত লোককথা (mythology) গুলিকে নিজেদের ধর্মে গ্রহণ করে নেই তাহলে তারা রোমান সাম্রাজ্যের মূল ও প্রধান ধর্ম হিসেবে ঘোষণা করে দিবে। আর সেই সময়কার যে চার্চ খ্রিষ্টান ধর্মের প্রধানে ছিলেন তিনি এই চুক্তিতে রাজি হয়ে যায়। এটাই খ্রিষ্টান ধর্মে এত ত্রুটি থাকার প্রধান কারণ। আর সেই জন্যেই তারা বলে থাকে
এখন খ্রিষ্টান ধর্ম পুরো পৃথিবীতে সব থেকে বেশি আছে এর পরে ইসলাম ধর্ম। এখন খ্রিষ্টান ধর্ম পুরো পৃথিবীতে দুই ভাগে বিভক্ত। ১) ইথিওপিয়ান খ্রিষ্টান ২) ক্যাথেলিক খ্রিষ্টান
১) ইথিওপিয়ান খ্রিষ্টান: ইথিওপিয়ান খ্রিষ্টানেদের কাছে প্রায় ৮০টি বাইবেলের অংশ আছে। অনেকে বলে থাকে এরাই আসল খ্রিস্টান ধর্মের মানে যে ধর্মকে ইসা (আঃ) ছড়িয়ে ছিল।
২) ক্যাথেলিক খ্রিষ্টান: ক্যাথেলিক খ্রিষ্টানেদের কাছে প্রায় ৭০টি বাইবেলের অংশ আছে। অনেকে বলে থাকে এরাই নকল খ্রিস্টান ধর্ম মানে যে ধর্মকে ইসা (আঃ) ছড়িয়ে ছিল তাকে পালটাতে পালটাতে এতটা পালটিয়ে দিয়েছে যে অন্য একটি ধর্ম বানিয়ে দিয়েছে।
এখন যে খ্রিষ্টান ধর্ম পুরো পৃথিবীতে দুই ভাগে ভাগ করেছে সেটি হল এই বুক অফ ইনোচ।
ইথিওপিয়ান খ্রিষ্টানরা যে ক্যাথেলিক খ্রিষ্টানদের থেকে ১০টি অংশের জন্য বিভক্ত সেই দশটি অংশ বুক অফ ইনোচ নামে পরিচিত।
এই বুক অফ ইনোচ পেয়েছিল কিছু গরীব আরবি মানুষেরা তারা এটিকে কুমরান বা কামড়ান উপত্যকায় যেটি এখনকার ফিলিস্তিনে অবস্থিত সেখানে খুঁজে পেয়েছিলো। তারা এটাকে বিক্রি করেছিল একটি দোকানে। এবং সেখান থেকেও সেটা পেয়ে যায় একজন অ্যামেরিকান ইতিহাস বৈজ্ঞেনিক জন সি ট্রাভার যিনি এটা কে পর্যবেক্ষণ করতে করতে জানতে পারেন যে এটা খ্রিস্টান ও ইহুদি ধর্মের গ্রন্থের একটি অংশ। এবং এত হিব্রু ভাষায় লেখা হয়েছিলো প্রায় ২২০০সাল পুরনো। অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন যে নাইসিয়ার সন্ধির সময় খ্রিস্টানদের চার্চকে টাকার প্রলভন দেখিয়ে রোমানরা বুক অফ ইনোচ লুকিয়ে দেয়। এই অংশের কিছু ঘটনা ইসলামের সাথে মিল খায় যেমন এই অংশে বলা হয়েছে, যে একদা কিছু এঞ্জেল আকাশ থেকে মাটিতে পরে গিয়েছিল অনুরূপ ঘটনা আমরা আল-কোরানে দেখতে পায় সুরা বাকারায় এটি হারুত ও মারুতের সমন্ধে বর্ণিত হয়েছিলো।
ইনচের বই হল একটি প্রাচীন ইহুদি সর্বনাশ কারী ধমীয় গ্রন্থ, যা ঐতিহ্য অনুসারে মথশেলাহর পিতা এবং নোহের বা নূহ (আঃ)-এর প্রপিতামহ পিতৃপুরুষ ইনোচের নামে লেখা । ইনচের বইতে দানব এবং নেফিলিমের উৎপত্তিনিয়ে যথেষ্ট পরিমাণে আলোচনা করা হয়েছে, কিছু ফেরশতা যে বেহেশত বা স্বর্গ থেকে পরে গেছিল মানে আল- কোরআনে সুরা- বাকারায় যে হারুত ও মারুতের ঘটনার বর্ণনা করা হয়েছে , কেন নূহ (আঃ) -এর যামানার লোকেদের বন্যা বা প্লাবনের দরকার ছিলো? না হলে কী হত এখন কার অন্যান্য ধর্মে তার সাথে এখন কার অনেক ইতিহাস যাদের ব্যাখা আমাদের কাছ থেকে লুকানো হয়েছে এবং মশীহের হাজার বছেরর রাজেত্বর ভবিষ্য বাণী, এই মধ্যে স্বতন্ত্র রচনাও কিছু রয়েছে এবং তার সাথে আরও অনেক ভবিষ্য বাণীর বর্ণনা করা হয়েছে এই বইতে।
ডেড সি স্ক্রোল গুলিতে পাওয়া কপির সংখ্যা ভাল করে দেখলে বোঝা যায় যে দ্বিতীয় মন্দিরের সময় কালে ইনোচের এই পুস্তকটি ব্যাপক ভাবে পাঠ করা হত কারণ ফিলিস্তিনে এরকম অনেক প্যাপাইরাস আপনি দেখতে পাবেন যেগুলি অনেকই নকল হয়। কিন্তু আজও ইথিওপিয়ার ইহুদিদের বিটা ইস্রায়েল সম্প্রদায়ই এক মাত্র ইহুদি গোষ্ঠী এবং খ্রিস্টানের মধ্যে যারা ইথিওপিয়ান খ্রিস্টান তারাও ইনোচের এই পুস্তককে প্রামাণিক হিসেবে গ্রহণ করে এবং এখনও তাদের ধর্মীয় ভাষা আরমাইক ও হিব্রু। কিন্তু এই নিয়ে অন্য চর্চা থাকলেও ইহুদি ও খ্রিস্টানরা চাইনা সেই জন্যেও বিষয় টি কখনও উঠে আসে না। তবে মজাদার কথা এটি যে ব্যাক্তি এই বুক অফ ইনোচ বা ইনোচের বই টিকে খুজে পেয়ে ছিলো সে ছিল একজন মুসলিম ব্যাক্তি। আর এই গ্রন্থে নবী আইজিয়া (আঃ)- এর ব্য্যাপারেও এসেছে।
এবং ইনচের বইটিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ঐতিহ্যগত ভাবে, ১নং ইনোচ , ২ নং ইনোচ , ৩ নং ইনোচ । ১নং ইনোচের পুরনো অংশগুলি প্রায় আনুমানিক ৩০০-২০০ কিংবা তারও বেশি অথবা কম খ্রিস্টপূর্বাব্দ আগেকার বলে কথিত আছে কিন্তু ভাল ভাবে জানা যায়নি কারণ আর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা করা হয়নি দ্বারা হয়। ১নং ইনোচকে বেশির ভাগ ইহুদী ও খ্রিস্টানরা ও তাদের গির্জা সংস্থা গুলি ইনোচের এই ভাগ টিকে প্রামাণিক ধর্ম গ্রন্থ হিসেবে মানেও না আর তার এর মধ্যে ধরেও না , যদিও এটি ইথিওপিয়ান ইহুদি সম্প্রদায় মানে বিটা ইসরায়েল যারা এটি কে লুকিয়ে রেখেছে, সেই সাথে ইথিওপীয় অর্থডক্স তেওয়াহেদো নামক চার্চ এবং ইরিত্রিয়ান অর্থোডক্স তেওয়াহেদো নামক চার্চ দ্বারা ব্যবহৃত বাইেবেলর ধর্ম গ্রন্থের অংশ ।
এবং ৩ নং ইনোচ মানে সর্বশেষ অংশটি প্রায় ১০০ কিংবা তারও বেশি অথবা কম খ্রিস্টপূর্বাব্দ আগেকার। অনেক আবারও এই কথাও বলে থাকেন এবং তারা বিশ্বাস করেন যে ইনোচের বইটি মূলত আরামাইক বা আরমেনিয়ান ভাষায় রচিত অথবা হিব্রু ভাষায় লেখা হয়েছিল , অর্থ্যাৎ যে ভাষা গুলি প্রথমে ইহুদি গ্রন্থের জন্য ব্যবহৃত হতো। বৈজ্ঞানিক ইফ্রিয়াম আইজাক তার পরামর্শ দেন যে ইনোচের বইটি দানিয়েলের বইয়ের মতো কিছুটা আরামাইক এবং কিছুটা হিব্রু ভাষায় রচিত হয়েছিল। কিন্তু এর হিব্রু ভাষায় কোনো সংস্করণ আছে বলে তো কখনো জানা যায় নি।
১ ইনোচের পূর্বের অংশ গুলির লিখিত প্যাপাইরাস গুলি কুমরান গুহায় মৃত সাগেরর মধ্য আরামাইক ভাষায় সংরিক্ষত ছিল । নতুন ধরনের নিয়মের ব্যাপারেও বৈজ্ঞ্যনিক ও পরীক্ষা নিরীক্ষাকারি দের বইটির কিছু বিষয়বস্তুর সাথে পরিচিত ছিলেন। ১ ইনোচের একিট সংক্ষিপ্ত অংশ যিহূদার পত্র , যিহূদা এ অংশে বলা হয়েছে এবং সেখানে "আদেমর সপ্তম ইনোচ"- এর সাথে সম্পর্কিত, যদিও ১ ইনোচের এই অংশটির অন্য একটি বিবরণ হল এটি একটি মিড্রাশ , যা ইনোচের অনুমিত দেওয়ার সময়ের অনেক পরে লেখা হয়েছিল। ইনোচের সম্পূর্ণ বইটি শুধুমাত্র সম্পূর্ণ রূপে টিকে আছে তা জানা যায় না ।