ঠিক কোথা থেকে জানলাম জানিনা। তবে প্রতিনিয়ত একটা না জানা অনুভুতি ধাওয়া করে চলেছে বলে মনে হয়। হঠাৎ ঘুম ভাঙল মায়ের "কি হয়েছে "চিৎকারে।
প্রতিদিন ভয় পাওয়া প্রতি কাজে ভয় পাওয়া জ্বর আসা অসুস্থ বোধ করা এ যেন নিত্ত দিনের সাথী।
ভয়, হয়ত আমি পারব না;ভয়, আমি একা হয়ে যাব; ভয় লোকে কি বলবে? ভয় বাবা মা যেদিন মরে যাবে সেদিন আমি কি করবো? চিন্তাগুলো প্রতিটা বর্তমান কেরে নিয়েছে।
আজ মা নেই ৪ বছর হল।আমি ত আছি। অথচ আজ ভয় বাবার কিছু হবে নাতো!
মা যেদিন মারা যায় সেদিন খুব কাঁদার বদলে নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ত ছিলাম আমি ।
আজও বাবা না থাকলে আমার কি হবে তা নিয়ে ব্যাস্ত আমি।
আমি কেমন যেন! আমি আর বাঁচতে চাইনা।
কিন্তু আমি বাঁচবো আমার স্বপ্ন পূরণ করতে হবে তো
আমি জানি না আমি কী করতে চাই!
আমার ভয় লাগছে।
ভয় টা ঠিক কি বুঝে উঠতে উঠতে আরও অন্ধকারে চলে যাওয়াটা বোধ হয় আমার নেশা। কারন অন্ধকারে ভয় আছে।
ঊফফ!!! এতকিছু একসাথে ভাবতে পাড়ছি না। সব ওলোট পালোট হয়ে যাচ্ছে।
আর কিছু ভাববো না। যা হওয়ার হোক গে, দেখে নেবো।
ভাবছেন তো এটা কী লিখছি।এটা একটা মেয়ের মনের প্রতিক্ষণের কথোপকথন।
মেয়েটা কে খুব কাছ থেকে চিনি। স্কিযোফ্রেনিয়ার রুগী। যখন ওর ক্লাস ৮ তখন পরিচয় ওর সাথে। আস্তে আস্তে অনেক বছর কেটে গেছে। বহু উথাল পাথাল ঘটেছে ওর জীবনে।অনেক শক্ত মনের হওয়ায় আজও আছে ও। হ্যাঁ।স্কিজফ্রেনিয়া সহজে সারে না। মানুষ নিজ হুশে থাকে না। অথচ ও প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছে নিজের সাথে। সুস্থ হয়ার লড়াই। শুধু অন্ধকারে ঢুকছে আর সেখানে আলোর এততুকু রশ্মি পেলে সেটাকে লক্ষ করে বেরিয়ে আসছে অন্ধকার থেকে। ওর জীবনটা ওর ,ওখানে ঠিক কি অনুভুতি সেটা আমরা কেউই অনুভব করতে পারব না। কিন্তু যেটা পারব সেটা হোল একটুখানি ওকে শুনতে,ওকে বোঝার চেষ্টা করতে। হ্যাঁ এরকম বহু মানুষ আছে যারা তাদের মনের এই ভয়টা এই অন্ধকার যায়গাটা অন্য মানুষের সামনে তুলে ধরতে চায় কিন্তু পারেনা। পারেনা কারণ তাদের কথা শোনার মতো ধৈর্য সময় আমাদের কাছে নেই। কে জানে আমরা তাদের দায়িত্ব নিতে হবে বোলে ভয়ে তাদের কথা না শোনার না বোঝার ভাণ করি কিনা! মানুষ তো। অনুভূতি সহমর্মিতা মনুষ্যত্ব থাকলে তাদের অবহেলা করার কোন যায়গা তো থাকা উচিৎ না। তাহলে থাকছে একটাই জিনিস, ভয়, দায়িত্ব নেওয়ার ভয়।
ভয় টা তাড়ানো দরকার। নিজেদের মনের ভয়টাকেও আর ওদেরটাকেও। নিজেদের মনের ভয় টা চলে গেলে ওদের বলা যাবে আমি তো আছি তোমার পাশে। তাহলে হয়ত ওদের একা হয়ে যাওয়ার ভয় টা আর থাকবে না। তখন নতুন লড়াইয়ের পথে পা বাড়াতে পারবে সে।
তাকে লড়াই করার সাহস জোগাতে আমাদের নিজের সাথে লড়াই করতে হোবে।তাহলে হয়ত সময় ধৈর্য দুই ই বাড়বে । তাহলে আজ আমি যাই ওর কাছে শুধু ওর কথা শুনতে।
আলো থেকে অন্ধকারে না হয় ভয় টা নিয়ে গেছে, অন্ধকার থেকে আলোয় না হয় আমি ফেরত আনলাম।