‘কু – সন্তান যদিও হয়

কু – মাতা কভু নয় '

আমরা এই প্রবাদটার সাথে সুপরিচিত। কথায় বলে, মা হওয়া কি মুখের কথা! সত্যি নয়, ন’মাস গর্ভে ধারণ করে সন্তানকে পৃথিবীর মুখ দেখানো সত্যি অনন্যসাধারণ কাজ। এবং সত্যি মায়ের তুলনা মা নিজেই। কিন্তু সন্তান জন্ম দিলেই প্রকৃতপক্ষে মা বাবা হওয়া যায় কি? মা বাবা হয়ে উঠতে লাগে সাধনা, লাগে সন্তানের মন বোঝার ক্ষমতা, লাগে আত্মত্যাগ। কিন্তু কোন বাবা মা যখন সন্তানকে নিজের সম্পত্তি বলে বিবেচনা করে, তখন?

Image by Mote Oo Education from Pixabay 

টক্সিক প্যারেন্টিং। অনেকেই এই শব্দটার সাথে পরিচিত নন। আবার যারা পরিচিত তারা বলবেন আরে বাচ্চা মানুষ করতে গেলে শাসন করতেই হয়। তাতে একটু-আধটু গায়ে হাত তোলার দরকার পড়ে। বকাঝকা করাও তারই অংশ। হ্যা, এগুলো সবই সন্তান মানুষ করার অঙ্গ, সব বাবা মায়েরাই কম বেশি এগুলো করেন। কিন্তু কিছু বাবা মায়েরা থাকেন যারা সন্তানদের মারাত্মক রকমভাবে কন্ট্রোল করেন। সন্তান কোন সাবজেক্ট নিয়ে পড়বে, কার সাথে বন্ধুত্ব করবে, কাকে তার জীবনে আনবে, এমনকি কতটা নিঃশ্বাস নেবে - পারলে সেটা পর্যন্ত ঠিক করে দেয়। এটা একধরনের মানসিক অসুস্থতা। এইধরনের প্যারেন্টিং প্রচন্ডরকমের অ্যাবুউসিভ এবং কন্ট্রোলিং হয়। এইধরনের প্যারেন্টিং এর মূল উদ্দেশ্য থাকে শুধু যে, বাচ্চাদের জীবন কন্ট্রোল করা তা নয়, বাচ্চারা যেন তাদের বাবা মায়ের ওপর এতোটা নির্ভরশীল হয়ে পড়ে তারা যেন তাদের নিজেদের বিচার বুদ্ধির ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে। আর বাচ্চারা যদি কোন কারণে বাবা মায়ের আচরনের প্রতিবাদ করে তাহলে ‘তুই কি বুঝিস আমরা তো অনেক বেশি অভিজ্ঞ’ বলে চুপ করিয়ে দেয়।

নাচের জগতের সাথে যুক্ত থাকার সুবাদে বহু মানুষের সঙ্গে মেলামেশা আছে। কিছু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তাদের বাবা মায়ের আচরনের কথা শুনলে মানুষ ধ্বন্দে পড়ে যাবে এটা ভেবে যে, এখনো এরকম মানুষ পৃথিবীতে বাস করে। অফিস থেকে ফিরে এসে ছেলে হয়তো ভীষণ ক্লান্ত। তার ক্লান্ত শরীর হয়তো তখন একটু ঘুম চাইছে। কিন্তু তার বাবা মায়ের চাহিদা অনুযায়ী ছেলেকে তখন জেগে বসে থাকতেই হবে। ছেলে একবার ঘুমিয়ে পড়েছিলো বলে বাবা বাইরের ঘর থেকে চিৎকার করে ডেকে তুলে দিয়েছিল। ওদিকে আবার ভোর ৫ টায় তুলে দিত ছেলেকে। বক্তব্য সারাদিনে ৪ ঘন্টার বেশি ঘুমের দরকার নেই। অবাক লাগে এসব শুনলে। একজন শিক্ষিত মানুষের এই চিন্তাধারা! আরেকজন বাবা মায়ের কথা বলি। তারা ছেলে কি খাবে, কতটা খাবে – সব ঠিক করে দিত। মানে ছেলে খেতে বসলে কতটা ভাত ডাল দিয়ে, কতটা ভাত মাছ দিয়ে খাবে – সব ঠিক করে দিত। এমনকি ভাত মেখে খাইয়ে দিত, একেবারে চটকে – যেমন একটা ছোট শিশু খায়। এদিকে ছেলের বয়স কিন্তু তিরিশ। ছেলেটির কাছে আরও শুনেছিলাম, তার বাবা ঠিক করে দিত কোনদিন কোন্ জামা পরে ছেলে অফিস যাবে। নিজের যদি কোনদিনও কোনো জামা পরে যেতে ইচ্ছে হত তাহলে ছেলের কপালে জুটতো গালাগালি, মানসিক অত্যাচার। এগুলো কি ভালোবাসা? ভালোবাসার নামে মানসিক অসুস্থতার নিদর্শন। এরা সন্তানের কাছ থেকে দাসত্ব আশা করে। আর সন্তান যদি সেই দাসত্ব গ্রহণ করে ও তার ঠিকঠাক প্রদর্শন করে তাহলে তার পায়ে যে বেড়িটা পড়াবে তার থেকে মুক্তি সে কোনদিনও পাবে না। মানসিক অসুস্থতার আরো নিদর্শন দিচ্ছি। এক ছেলে তার ভালোবাসার সাথীকে বিয়ে করে এনেছে। এবং আপাতদৃষ্টিতে এই বিয়েতে তার বাবা মায়েরও মত ছিল এবং তার একমাত্র ছেলের যথেষ্ট ধূমধাম করেই বিয়ে দিয়েছিল। গোল বাঁধলো বিয়ের পর। বউমা ছিল সুন্দরী, ফর্সা, আধুনিকা ও কর্মরতা। আর শাশুড়ি ছিলেন গ্রাম্য, কালো ও মধ্যযুগীয় মনোভাবাপন্ন। শুরু হয়ে গেল এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতা। বউমাকে যত বাগে আনতে পারছেন না তত রাগ গিয়ে পড়ছে ছেলের ওপর। একটা সময় পর্যায় এমন চলে গেল যে, রাত ১১টায় ছেলেকে দিয়ে সমস্ত বাসন ধোয়াচ্ছেন। কারণ সেদিন বাসন বৌমা ধুতে পারেনি কাজে ব্যস্ত ছিল বলে। মানসিক নির্যাতনের এরূপ নিদর্শণ কেউ কোথাও শুনেছে কিনা আমার জানা নেই। ফলস্বরূপ সেই একমাত্র ছেলে বউ সমেত বাবা মায়ের থেকে আলাদা থাকে।

আমার জানা এরূপ মানসিক নির্যাতনের অনেক ঘটনা রয়েছে, সব বলতে গেলে রাতভোর হয়ে যাবে। তার থেকে বরং আসুন জেনে নেই টক্সিক প্যারেন্ট চেনার কিছু উপায়:

১) এইধরনের বাবা মায়েরা বাইরের লোকজন, আত্মীয় স্বজনের কাছে নিজেদের ছেলে মেয়েকে আদর্শ সন্তান হিসেবে তুলে ধরতে চায়, যে কিনা বাবা মায়ের সব কথা মাথা পেতে নেয়। বাবা মায়ের কথায় উঠতে বসতে চলতে গিয়ে সন্তান যে নরকজীবন পালন করছে সে ব্যাপারে বাবা মায়ের কোন ভ্রূক্ষেপ নেই।

২) উন্নত মনোভাবসপন্ন সমাজে বাবা মায়েরা ১৮ বছরের পরেই ছেলে মেয়েদের ছেড়ে দেয় যাতে তারা ভুল করতে করতে শিখতে পারে। কিন্তু এই ধরনের বাবা মায়েরা সন্তানকে কাছ ছাড়া করেন না। তাদেরকে এটা বোঝানো হয় যে, ব্যক্তিস্বাধীনতা বলে কিছু হয় না। বাবা মায়ের ইচ্ছেই হল শেষ কথা। এরা বাচ্চাদের কোন ব্যাপারে স্বাধীনতা দিতে চায় না। কারণ, আজ যদি কোন ব্যাপারে বাচ্চা স্বাধীনতা পেয়ে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে সব ব্যাপারেই স্বাধীনতা চাইবে, তাতে এই বাবা মায়েরা বিপদে পড়বে। কারণ তখন সন্তানরা আর তাদের হাতের মুঠোয় থাকবে না।

৩) ‘তুই কি জানিস, তোর কোন কথা বলা উচিত না। আমার কথা শোন। আমার বয়স হয়েছে, অভিজ্ঞতা অনেক বেশি’। বড়রা প্রায়সই এরকম কথা বলেন। কথাটা অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক। কিন্তু অ্যাবুউসিভ প্যারেন্টরা বলেন অন্যের ওপর রোয়াব বজায় রাখার জন্য। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে, এরা হয়তো সারাজীবন খুব সাধারণ মানের চাকরি করেছে, বা সেরকম কিছু করেইনি সারাজীবন। বয়সের আড়ালে অভিজ্ঞতা বেশি এই তত্ত্ব এ বিশ্বাসী এরা। খুব সরল ভাষায় বলতে গেলে ‘মিথ্যে অহংকার’ এদের এরূপ মনোভাবের কারণ।

৪) এদেশে এখনো ৩০-৩৫ অবধি সন্তানরা বাবা মায়েদের সাথেই থাকে। থাকাটা অন্যায় বলছি না। কিন্তু টক্সিক প্যারেন্টিং এর ক্ষেত্রে বাবা মায়েরা নিজেদের কাছে সন্তানদের আটকে রাখে। এইধরনের বাবা মায়েদের সন্তানরা এতটাই নির্ভরশীল হয় যে, এরা বাইরের দুনিয়াদারি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয়না। তারফলে এইসব সন্তানরা ভীতূ, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, হতাশাগ্রস্ত তৈরি হয়।

৫) সাধারণত এইধরনের মানুষরা ভীষনরকম জাজমেন্টাল হয়। কথায় কথায় অন্যকে ভীষণ রকমভাবে জাজ্ করে। এবং মজার কথা হলো এরা ভাবে এরা যাকে ভালো বলছে সে ভালো, আর যাকে খারাপ বলছে সে খারাপ। সাধারনত এইধরনের মানুষরা কোন কাজের সাথে যুক্ত থাকে না। সারাদিন শুয়ে বসে থাকে আর কি করে অন্যকে ফা৺দে ফেলবে তার প্ল্যানিং প্লটিং করে। যে বা যারা এদের মনের মত চলবে না তার নামেই কুৎসা রটাবে, ফা৺দে ফেলার চেষ্টা করবে - তা সে নিজের সন্তানই হোক না কেন।

৬) টক্সিক প্যারেন্টরা ভীষণ আত্মকেন্দ্রিক হয়। এদের ইগো, অহংকার এতটাই বেশি যে, সন্তানকে ঘিরে যাই কার্যকলাপ করে না কেন সেটা শুধুমাত্র নিজেদেরকে খুশি করার জন্য।

৭) এইধরনের বাবা মায়েরা মারাত্মক ম্যানিপুলেটিভ হয়। তারা জানে যে, তারা কোনভাবেই বাচ্চাকে মারধর করতে পারবে না। তাই যেভাবে হোক ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করে, কে৺দে কেটে সন্তানকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে, বাচ্চার দ্বারা তার বাবা মা কতটা আঘাত পেয়েছে। এইধরনের বাবা মা খুব ভালোভাবেই জানে যে, গায়ে হাত তুললে বেকার বদনাম হয়ে যাবে, তার থেকে যদি এই ট্রিকস্ অ্যাপ্লাই করা যায় তাহলে সন্তান হাতের মুঠোয় থাকবে। ফলস্বরূপ এইধরনের বাচ্চারা সারাক্ষণ অপরাধবোধে ভোগে। এরা বাচ্চাদেরকে অনুভব করায় তারা যেন ফ্যামিলির ‘ব্ল্যাক শিপ্’।

এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সাথে মোকাবিলা করার জন্য কয়েকটি উপদেশ:

১) যখনই চিনে ফেলা যাবে যে, বাবা মা টক্সিক সোজামুখে বলে দেওয়া দরকার তাদের কতটা বাউন্ডারি। আর তার বাইরে বাবা মাকে আসতে দেওয়া যাবেনা।

২) যতটা সম্ভব নিজের কাজ নিজেই করতে শেখা। প্রথম প্রথম অসুবিধা হবে, কিন্তু ভবিষ্যতে নিজেরই সুবিধা হবে।

৩) যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব টাকা পয়সা উপার্জন করা। এই টাকার জন্যই কিন্তু সন্তানরা বাবা মায়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। তাই যতটা সম্ভব নিজের খরচা নিজেই চালানোর মত ক্ষমতা তৈরী করতে হবে। দরকার পড়লে টিউশনি করে, কিছু অনলাইন কোর্স করে টাকা উপার্জন করার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪) ফাইন্ড ইয়োর সাপোর্ট সিস্টেম। টক্সিক প্যারেন্টিং এতটাই সংবেদনশীল বিষয় যে, এটা নিয়ে কাউকে কিছু বলা যায় না। কিন্তু দু’একজন এমন বন্ধু রাখা উচিত যাদেরকে বিশ্বাস করে সব কথা বলা যায়। এতে মন হালকা হবে আর নিজেকে দমবন্ধ পরিবেশে আটকে আছি এটা মনে হবে না।

৪) নিজেদের এক্সপেক্টেশনগুলোকে সীমিত করে ফেললে অনেকটাই চাপ কমে যাবে। যেসব বাচ্চারা এইধরনের বাবা মায়ের সাথে বড় হয়েছে তারা জানে যে, কোন্ পয়েন্টের পর তার বাবা মা আর কথা বুঝবে না। আমার বাবা মা কেন বুঝছে না, আমার বাবা মা কেন অন্যের বাবা মায়ের মত না – এসব না ভেবে নিজেকে বোঝানো দরকার যে, ওরা ওরকমই, তার জন্য সন্তান দায়ী নয়।

৫) কনভারশেসনকে ডাইভার্ট করার চেষ্টা করতে হবে। যখনই দেখা যাবে যে, বাবা মায়ের কথার কোন প্রসঙ্গ নিজের ওপর এসে যাচ্ছে, বুদ্ধি করে অন্যদিকে কথা ঘুরিয়ে দিতে হবে। কোনভাবেই এদের সাথে তর্কে জড়ানো যাবেনা। কারণ যে মূহুর্তে এদের ইগোটা হার্ট হয়ে যাবে এরা যেরকমভাবে পারবে সামনের মানুষটাকে নীচু দেখানোর চেষ্টা করবে।

প্রাচীনযুগ থেকেই মানুষের প্রবৃত্তি হল অন্য মানুষকে নিজের দাস এ পরিণত করা। টক্সিক প্যারেন্টিং ও এই মতাদর্শেই বিশ্বাসী। এটা একটা মানসিক অসুস্থতা। একটু খোঁজ নিয়ে দেখবেন, এইসব বাবা মায়েরা সাধারণত প্রচুর অর্থের অধিকারী হন। কিন্তু নিজেদের মনে কোন শান্তি নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এরা স্বামী স্ত্রী হিসেবেও ব্যর্থ। নিজেদের মধ্যে মিল না থাকায় তার ফ্রাস্ট্রেশন সন্তানের ওপর এসে পড়ে। এবার যে সন্তান যত নিরীহ হবে, সেই সন্তান তত মানসিকভাবে অত্যাচারিত হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এইধরনের মহিলারা সন্তানের জন্ম দেন যাতে শশুর শাশুড়ির মুখ বন্ধ হয়ে যায় বা বর ডিভোর্স না দিয়ে চলে যায়। এসব ক্ষেত্রে সন্তানের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয় না। সন্তান কে প্রাইভেট প্রপার্টি ভেবে ফেলে। সন্তানকে একজন আলাদা মানুষ ভাবতে না পারার মধ্যে একটা মধ্যযুগীয় বর্বরতা লুকিয়ে আছে। নিজের সন্তানের ওপর অধিকারের লোভে এরা এতটাই অন্ধ হয়ে যায় যে, নিজের সন্তানকে ক্রীতদাসে পরিণত করতে এতটুকু পিছপা হয়না। সে যে একজন ইন্ডিভিসুয়াল, তার যে কিছু ইচ্ছে অনিচ্ছে আছে, কিছু চাওয়া পাওয়া আছে – সেটা এইসব বাবা মায়েরা ধর্তব্যের মধ্যেই ধরে না। সন্তানের জন্ম দিয়ে এরা সন্তানকে কিনে নিয়েছে – এরূপ মনোভাব পোষণ করে। আর মজার ব্যাপার হলো টক্সিক প্যারেন্টিং এর অস্তিত্বকে কেউ স্বীকার করতে চায় না। এবার হয়তো অনেকেই ভাবছেন এসব আসলে আমার সাথেই হয়েছে তাই এসব লিখছি। নাঃ, আমি টক্সিক প্যারেন্টিং এর শিকার নই। আমি খুব স্বাধীন মতাদর্শে বড় হয়েছি। কিন্তু আমার কিছু প্রিয়জনকে দেখেছি এর শিকার হতে। ভীষণ মানসিক কষ্ট পেতে দেখেছি খুব কাছ থেকে। দিনের পর দিন দেখেছি বাবা মায়ের ভয়ে কুঁকড়ে থাকতে। টক্সিক রিলেশনশিপ যেমন হয় তেমনি টক্সিক প্যারেন্টিংও হয় – এটা যত তাড়াতাড়ি মেনে নেওয়া যায় ততই আমাদের সমাজের মঙ্গল।

আমার এই আর্টিকেল কাউকে আঘাত দেওয়ার জন্য নয়। আমি শুধু চাইছি, যেসব বাচ্চারা টক্সিক প্যারেন্টিং-এর শিকার তারা যদি এটা পড়ে এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সাথে মোকাবিলা করার সাহস পায়, তাহলে আমি মনে করবো আমার এতক্ষণের পরিশ্রম সার্থক। পেরেছি একজনকে হলেও তাকে এই যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় বাতলে দিতে। আর সন্তানদের বলবো, বাবা মাকে খুশি করে চলতে চলতে নিজের ইচ্ছে অনিচ্ছেগুলোকে গলা টিপে আর মেরো না। বাবা মা কোনভাবেই যেন আঘাত না পায় সবসময় সেটা তুমি ভাবছো, কিন্তু তারা তোমার খুশির কথা ভাবছে কি? বাবা মাকে ভালোবাসা আর বাবা মাকে ভয় পেয়ে চলার মধ্যে অনেক তফাৎ আছে। জীবনটা তোমার, আর এতে সব থেকে বেশি অধিকার তোমার রয়েছে। তাই বাচো নিজের মত করে, কাউকে খুশি করে নয়। নিজেকে ভালোবাসতে পারাটাও একটা গুণ। আর তার জন্য লাগে অর্থনৈতিক ও মানসিক জোর। পায়ের তলার জমি যত শক্ত হবে তত এইসব পরিস্থিতির সাথে লড়তে পারবে।

আর যেসমস্ত টক্সিট প্যারেন্টরা আমার এই আর্টিকেল পড়ে আমাকে গালি দিচ্ছেন বা আঘাত পেয়েছেন – বিশ্বাস করুন ‘আই আ্যম নট সরি ফর দ্যাট’। আপনি/আপনারা টক্সিক তাতে আমি কি করতে পারি! আগেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি, আজকেও হলাম, দরকার পড়লে ভবিষ্যতেও হবো। আর তাতে কে কি বললো কিছু যায় আসে কি – উত্তর হচ্ছে ‘না’।

.     .     .

Discus